নদী-খাল পুনঃখনন প্রকল্পে গ্রামীণ অর্থনীতির প্রভাব।
নিজস্ব প্রতিবেদক: ৬৪ জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পে পানির ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বছরব্যাপী সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে চায় সরকার।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ২ হাজার ২৭১ কোটি ১৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৮ সালের নভেম্বর হতে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদে প্রথম সংশোধিত আরডিপিপি বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদন করে। বর্তমানে প্রকল্পের আওতায় ৬৬৮টি কাজ বৃদ্ধি করে প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এ সংশোধনীতে প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৬৯ কোটি ৭৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা। যা মূল অনুমোদিত প্রকল্প ব্যয়ের চেয়ে ৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা কম।
এই প্রকল্পের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন ছোট নদী খাল ও জলাশয়ের প্রায় ১৬ টি দরপত্র আহ্বান করা হয়। তার মধ্যে সুলুই খাল, নুরাই খালী খাল, সিনাখালী খাল, দুলভাঙ্গা খাল, খাগালিয়া খাল, লৌহর নদী, আটলা বাজার খাল, বাসুদেব খালের পুনঃখননের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকী গুলো কাজ চলমান রয়েছে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ছোট নদী, খাল এবং জলাশয়গুলোর পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বছরব্যাপী সেচ সুবিধা নিশ্চিত করা। প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে। এছাড়া জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ, ছোট নদী, খাল এবং জলাশয়গুলোর আনুমানিক ৬ লাখ হেক্টর এলাকার নিষ্কাশন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে বন্যা ও জলাবদ্ধতা ঝুঁকি কমিয়ে আনা হবে।
পুনঃখননের মাধ্যমে ছোট নদী, খাল এবং জলাশয়গুলো পুনরুজ্জীবিত করা, নাব্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার নৌ চলাচলের সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। ছোট নদী, খাল এবং জলাশয়গুলোর পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও দীর্ঘায়িত করে মৎস্য চাষের উন্নয়ন করা, ছোট নদী, খাল এবং জলাশয়গুলোর উভয় তীরে বনায়ন করা এবং খনন করা মাটি দ্বারা ছোট নদী, খাল ও জলাশয়গুলোর উভয় তীরে ভূমি উন্নয়ন করা হবে।
প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। এদেশে প্রবাহিত হচ্ছে অসংখ্য নদ-নদী। এদেশের আয়তন প্রায় ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটার। যার মাধ্যমে প্রায় ৯ হাজার ৭৩৪ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে নদ নদী, খাল বিল, ঝিল ও হাওর তথা মুক্ত জলাশয়। এ সব খাল, নদী ও জলাশয় সুপেয় পানির ধারক। এ আধারের পানি কৃষি কাজে ব্যবহার করা হয়।
জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় পানির প্রয়োজন অপরিসীম। দেশের মোট ভূমির শতকরা ৮০ ভাগ প্লাবন ভূমি, যা বর্ষায় প্লাবিত হয়। আবার বাংলাদেশের জলবায়ু ও ঋতু বৈচিত্র্যের কারণে বর্ষাকালে প্রায় প্রতিবছরই বন্যা হয় এবং দেশের অধিকাংশ ভূমি প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি বড় ও মাঝারি নদীর পাড় ভাঙ্গনসহ অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ফলে বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি, ফসল, ঘরবাড়ি ইত্যাদি সম্পদ হুমকির মুখে পড়ে।
Comments
Post a Comment