বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ফেসবুকের সুফল আর কুফল!


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে ফেসবুক। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের একটি বৃহৎ অংশই হলো
তরুণ সমাজ। সাম্প্রতিককালে ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে নানা আপত্তিকর পোস্টের জের ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয় ও ঘর-বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কিংবা বিভিন্নজনের নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে এ ধরণের অপরাধমূলক কর্মকা- পরিচালনা করা হয়ে থাকে বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এসব ঘটনায় দেশ ও দেশের বাইরে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরীফকে অবমাননা করে পোস্ট দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও ঘর-বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের মনেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যারা দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চায় কিংবা সাম্প্রদায়িক সসম্প্রীতি বিনষ্ট করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চায় তারা কি তবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্য ঢাল হিসেবে ফেসবুকের অপব্যাবহার করছে?
এসব ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমেদ ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদেরকে প্রত্যাহার করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু পল্লী পরিদর্শন করে বিশিষ্টজনেরা অবশ্য এ হামলার জন্য সরকার ও প্রশাসনের ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কক্সবাজারের রামু উপজেলার বৌদ্ধপাড়ার উত্তম বড়-য়া নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার অভিযোগ এনে গত ২০১২ সালের ২৯ অক্টোবর বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ১২টি বৌদ্ধ বিহার ও ৩২টি ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
রামুর এ ঘটনার পরও দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের বেশ কয়েকটি ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে দুস্কৃতিকারীরা। সর্বশেষ ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরীফ অববাননার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ১০টি মন্দির ও শতাধিক ঘর-বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে দুস্কৃতিকারীরা।herbeauty.coতবে নাসিরনগরে হামলার পর সেখানে এক সর্বদলীয় সুধী সমাবেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ধ্বংস করতেই নাসিরনগের হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয় ও ঘর-বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে দুস্কৃতিকারীরা। তবে বাংলাদেশে আমরা কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মাথা উঁচু করতে দেবো না। যারা এ হামলার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে, কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।’
ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা খুব সহজ। যেহেতু দুস্কৃতিকারীরা আগের মতো প্রত্যক্ষভাবে মাঠে নামতে পারছে না তাই তারা প্রযুক্তির সুযোগাটা নিচ্ছে। তবে এসব বিষয় নিয়ে পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা টিম ও গোয়েন্দারা কাজ করছেন।’

Comments

Popular posts from this blog

দেশে আপওয়ার্ক বন্ধ নিয়ে বিতর্ক

সরাইলে শুরু হয়েছে দুদিনব্যাপী ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী কালীকচ্ছ সম্মিলনী’